কাঁঠাল (Jackfruit)

0
168

পরিচিতি

বাংলা নামঃ      কাঁঠাল                                                                                   

ইংরেজী নামঃ    Jackfruit
বৈজ্ঞানিক নামঃ Artocarpus heterophyllus

গুরুত্বঃ   কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। ইহা গ্রীস্ম মৌসুমের ফল। কাঁঠালকে দুর্ভিক্ষের ফলও বলা হয়। কাঁঠাল খেলে সহজে ক্ষুধা পায়না । অনেক দেশে শারীরিক স্বাস্থ্য কমানোর জন্য কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। গাজীপুর, ময়মনসিংহ, সাভার, মধুপুর অঞ্চলে উৎকৃষ্ট মানের কাঁঠাল জন্মায়। এটি ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল।
জাতঃ    কাঁঠালের সুনির্দিষ্ট কোন উন্নত জাত না থাকলেও খাজ, গিলা ও দো’রাসা জাতের কাঁঠাল দেখা যায়। 

ভূমিকা

বাংলাদেশে কাঁঠালের কোন সুনির্দিষ্ট অবমুক্তায়িত জাত নেই। কোষের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে কাঁঠালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। খাজা কাঁঠালঃ এ জাতীয় কাঁঠালের কোষ শক্ত, কচকচে এবং মিষ্টি কম। গালা কাঁঠালঃ এ জাতীয় কাঁঠালের কোষ নরম, রসালো, সুগন্ধিযুক্ত, মিষ্টতা বেশী । দো-রসা কাঁঠালঃ এ জাতীয় কাঁঠালের কোষের আগার দিক নরম, রসালো, সুগন্ধিযুক্ত। গোড়ার দিক শক্ত, কচকচে। মিষ্টতা মাঝামাঝি। আমাদের দেশে বছরে দুই বার ফল ধরে এমন বারমাসি জাতও দেখা যায়।

মাটি

দো-আঁশ, বেলে দোঁ-আশ ও কাঁকুরে মাটিতে কাঁঠাল ভাল হয়। অম্লীয় লাল মাটিতে কাঁঠাল গাছের বৃদ্ধি ভাল হয়।

জমি নির্বাচন

বৃষ্টির পানি দাড়ায় না বা বন্যার পানি উঠে না এমন উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। পানির তল যদি দীর্ঘদিন শিকড়কে ডুবিয়ে রাখে, কিংবা বন্যার পানি আটকা পড়ে তাহলে কাঁঠাল গাছের ভীষণ ক্ষতি হয়, এমনকি মারাও যেতে পারে।

চারা উৎপাদণ

সাধারনত উন্নত জাতের কাঁঠালের বীজ হতে চারা তৈরী করা হয়। কাঁঠাল বীজ শুকিয়ে ঘরে রাখা যায় না, এতে বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই কাঁঠাল খাবার পর বীজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বীজতলা বা পলিথিন ব্যাগে স্থাপন করতে হবে। সম্ভব হলে মাদা তৈরী করে সরাসরি বীজ মাদায়ও রোপণ করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাদা প্রতি ৪-৫টি বীজ রোপণ করতে হবে। চারা গজানোর পর একটি সবল চারা রেখে অবশিষ্ট চারা গুলো তুলে ফেলতে হবে। পলিথিন ব্যাগের চারা রোপণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন চারাটির প্রধান শিকড় কোন অবস্থায় ক্ষাতগ্রস্থ না হয়। আজকাল জোড় কলমের মাধ্যমে উৎপাদিত চারার মাধ্যমেও কাঠাল চাষে সফলতা পাওযা গেছে।

রোপণ পদ্ধতি

কাঠাল বাগান তৈরীতে বর্গাকার, আয়তাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। পাহাড়ী এলাকায় ম্যাথ পদ্ধতিতে অন্যান্য ফসলের সাথে কাঁঠাল গাছ লাগানো যায়।
রোপণ দুরত্ব
গাছের দুরত্ব ১২ মিঃ x ১২ মিঃ

মাদা তৈরী ও চারা রোপণ

১ মিঃ x ১ মিঃ x ১ মিঃ আকারে মাদা তৈরী করতে হবে। মাদা তৈরীর পর নিম্নের ছকে উল্লেখিত সার মাদায় প্রয়োগ করতে হবে। মাদা তৈরীর ১৫ দিন পর মাদার মাঝখানে একটি সুস্থ ও সবল চারা রোপণ করতে হলে। চারা রোপণের সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে চারা গাছের গোড়া যতটা ব্যাগের মাটির ভিতর ছিল, তার বেশি যেন গর্তের মাটির ভিতর চাপা না পড়ে। চারা লাগানোর পর চারার গোড়ার মাটি ভালভাবে চেপে একটু উঁচু করে দিতে যেন রোপিত চারার গোড়ায় পানি না জমে। কাঠাল চারার গোড়া বা শিকড়ে পানি জমে থাকলে চারাটি মারা যাওয়ার যথেষ্ট থাকে।

kathal gach

উপরি সার প্রয়োগ ও পানি ব্যবস্থাপনা

কাঁঠাল গাছে বছরে দুই বার উপরি সার প্রয়োগ করা উচিৎ। প্রথম কিস্তি বৃষ্টি আরম্ভ হওয়ার আগে বৈশাখ-জ্যেষ্ঠ এবং দ্বিতীয় কিস্তি বর্ষার শেষে অর্থাৎ আশ্বিন – কার্তিক মাসে প্রয়োগ করতে হবে। গাছের বয়সের সাথে সাথে সারের মাত্রার তারতম্য হয়ে থাকে। নিম্নের ছকে উল্লেখিত বয়স ভিত্তিক সারের মাত্রা অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। কাঁঠাল গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে সে জন্য পানি নিষ্কাশনে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। খরার সময় প্রয়োজনীয সেচ না দিলে ফল ঝরে পড়ে। প্রতি ১০- ১৫ দিন অন্তর অন্তর সেচ দিতে হবে। রিং- বেসিন পদ্ধতি কাঠাল গাছে সেচ দেয়ার জন্য উত্তম।

গাছের বয়সগোবর/ কম্পোষ্ট (কেজি)ইউরিয়া (গ্রাম)টিএসপি (গ্রাম)এমপি (গ্রাম)জিপসাম(গ্রাম)এমোনিয়াম সালফেট (গ্রাম)
মাদায়২০২৫০২৫০৫০
৬-১২ মাস২০-৩০১৯০-২১০২৪০-২৬০২৪০-২৬০৪০-৬৬-০২৫০-৩০০
১-২ বছর২৫-৩৫২৯০-৩১০৩৯০-৪১০৩৪০-৩৬০৬৫-৮৫৩০০-৩৫০
২-৩ বছর৩০-৪০৩৯০-৪১০৫৪০-৫৬০৪৪০-৪৬০৯০-১১০৪৫০-৫০০
৪-৫ বছর৪০-৪৫৪৯০-৫২০৫৯০-৭১০৫৪০-৫৬০১১৫-১৩৫১০৫০-১১০০
৬-৭ বছর৪৫-৫০৫৯০-৬১০৮৪০-৯৬০৬৪০-৬৬০১৪০-১৬০১৬৫০-১৭০০
৮-৯ বছর৫০-৫৫৬৯০-৭২০৯৯০-১০১০৭৪০-৭৬০১৬৫-১৮৫১৯৫০-২০০০
তদুর্ধ৫৫-৬০১০০০-১২০০১৫০০-১৬০০১০০০-১২৫০২০০-৩০০২২০০-২৩০০
কাঁঠাল গাছের সার

রোগ বালাই ও প্রতিকার

ফল পচা রোগ
ছত্রাক জনিত এ রোগের আক্রমনে গাছের কঁচি ফলের ( স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরী) গায়ে বাদামি রংয়ের দাগ দেখা যায় এবং কচি অবস্থাতেই ফল ঝরে পড়ে। পুরুষ পুষ্পমঞ্জরী পরাগায়নের শেষে স্বাভাবিক ভাবে কাল হয়ে ঝরে পড়ে। প্রতিকারঃ
১। ঝরেপড়া পুরুষ ও স্ত্রী পুষ্পমঞ্জরী সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২। ফলিকুর নামক ছত্রাক নাশক ০.০৫% হারে পানিতে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর ১৫ দিন অন্তর অন্তর তিন বার প্রয়োগ করতে হবে।
৩। ডায়থেন এম-৪৫ অথবা রিডোমিল এম জেড-৭২ প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।

ফল ছিদ্রকারী পোকা
এটি কাঁঠালের অত্যান্ত ক্ষতি কারক পোকা। পূর্ন বয়স্ক পোকা কাঁঠালের গায়ে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে লার্ভা ভিতরে প্রবেশ করে। প্রাথমিক অবস্থায় ছোট ছিদ্র সহ পোকার তাজা বিস্টা দেখা যায়। ধীরে ধীরে ছিদ্র বড় হতে থাকে এবং পরবর্তীতে ছত্রাকের আক্রমন পরিলক্ষিত হয়। অক্রান্ত স্থানে পচন ধরে এবং কাঁঠাল আশিংক বা সম্পুর্ন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রতিকারঃ
১। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ। আক্রান্ত কাঠাল মাটিতে পুতেঁ ধংশ করে ফেলতে হবে।
২। নিম তেল (প্রতি লিটার পানিতে ১০ মি:লি: হারে) + ট্রিক্‌স ৫ মি:লি: মিশিয়ে সেপ্র করতে হবে।
৩। ব্যাপক আক্রমন হলে ডাইমেথোয়েট জাতীয় কীটনাশক (প্রতি লিটার পানিতে ২ মি:লি: হারে) ফুট পাম্প এর সাহয্যে সেপ্র করতে হবে। কান্ড ছিদ্রকারী পোকা
এ পোকা গাছের কান্ডে ছিদ্র করে ভিতরের অংশ কুরে কুরে খায় এবং গাছের ফলন কমে যায়, অবশেষে গাছটি মারাও যেতে পারে। প্রতিকারঃ
১। ছিদ্রের ভিতর লোহার শলাকা ডুকিয়ে পোকা মারার ব্যবস্থা করতে হবে।
২। সিরিঞ্জের মাধ্যমে কেরোসিন মিশ্রিত পানি বা কীটনাশক মিশ্রিত পানি ছিদ্রের ভিতরে প্রবেশ করিয়ে ছিদ্রের মুখ কাদা মাটি দিয়ে লেপে ভিতরের অবস্থিত পোকা মারা যাবে।

ডাল ছাঁটাই

কাঁঠালের চারা বা কলম রোপণের পর অপ্রয়োজনীয় শাখা প্রশাখা কেটে দিলে মূল কান্ড তৈরীতে সহায়ক হয়। কাঠাল গাছের কান্ড এবং প্রধান শাখা হতে কাঠাল ধরে। তাই কাঁঠাল গাছে অংগ ছাটাই করা হয় না। তবে কাঁঠাল গাছের ফল সংগ্রহের পর বড় গাছের মরা ডাল, ভিতরের ছোট ছোট শাখা-প্রশাখা এবং পূর্ববর্তী বছরের ফলের বোঁটার অবশিষ্ট অংশ কেটে অপসারণ করতে হবে। কাঠাল গাছ প্রুনিং এর উপযুক্ত সময় হল ভাদ্র মাস।

kathal gache dhora

কাঁঠালের জোড় কলম

ভূমিকাঃ
আমাদের দেশে বিরাজমান বিভিন্ন ফল ফলাদির মধ্যে কাঁঠাল অন্যতম। কাঁঠালের এমন কোন অংশ নেই যা ব্যবহার যোগ্য নয়। আর সে জন্যেই কাঁঠাল-এর জাতীয় ফল নামটি অতি যুক্তিসঙ্গত। তাছাড়া এর কাঠ মূল্যবান আসবাবপত্র তৈরীতে ব্যবহৃত হয়। আর পুষ্টি বিবেচনায় এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ (৪৭০০ মাইক্রোগ্রাম) কার্বোহাইড্রেট ৯.৪ গ্রাম, প্রোটিন ২.৬ গ্রাম, চর্বি ০.৩ গ্রাম, ফসফরাস ৯৭ মিঃ গ্রাম, আয়রন ৫০০ মিঃ গ্রাম, রিবোফ্লাবিন ০.১১ মিঃ গ্রাম, পটাশিয়াম ২৮৬ মিঃ গ্রাম, থায়ামিন ০.২৫ মিঃ, গ্রাম ভিটামিন-সি ২১ মিঃ গ্রাম, প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁঠালে বিদ্যমান। তাছাড়া বীজেও প্রচুর পরিমানে আমিষ, শর্করা ও আঁশ বিদ্যমান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অবহেলায় ও অযত্নে আজ কাঁঠালের ভাল ও উন্নতমানের ফলদানে সক্ষম গাছগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অঙ্গঁজ বংশ বিস্তারের মাধ্যমে উক্ত উন্নত জাতগুলোর গুণাগুণ ধরে রাখা যায়। কাজেই কাঁঠাল ক্রমবর্ধমান মানুষের পুষ্টি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

জোড় কলম কি ?
সাধারণত দু’টি উপায়ে গাছের বংশ বিস্তার করা সম্ভব। একটি বীজ হতে, অপরটি অঙ্গঁজ উপায়ে। বীজ হতে প্রাপ্ত গাছ মাতৃগাছের গুণাগুণ ধরে রাখতে পারে না। কিন্তু অঙ্গঁজ বংশ বিস্তারের মাধ্যমের মাতৃগাছের গুণাগুণ হুবহু বজায় রাখা যায়। কারণ জোড় কলমের মাধ্যমে অনাকাংক্ষিত কিন্তু পরিবেশ সহনশীল এমন একটি চারাগাছ (রুট স্টক) এর উপরে কাঙ্ক্ষিত গাছের কান্ডের অংশ (সায়ন) জোড়া লাগানেরা মাধ্যমে হুবহু মাতুগাছের গুণাগুণ সম্পন্ন গাছ পাওয়া যায়, যা কাঙ্ক্ষিত ফলদানে সক্ষম। জোড় কলঃমের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, যেমন-ক্লেফট, ভিনিয়ার, অংকুর ইত্যাদি। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল গাছ উন্নয়ন প্রকল্প (এফ. টি . আই. পি.) এর জার্মপ্লাজম সেন্টারে গবেষণায় দেখা গেছে যে , ক্লেফট জোড় কলমে বেশী সফলতা আসে।

জোড় কলমের সুবিধাঃ
ক) মাতুগাছের গুণাগুণ সম্পন্ন গাছ পাওয়া যায় যা কাঙ্ক্ষিত ফলদানে সক্ষম।
খ) বিলুপ্ত প্রায় এমন গাছকে ধরে রাখা যায়।
গ) রোগ-বালাই, কীট পতঙ্গঁ প্রতিরোধী এবং পরিবেশ সহনশীল গাছ পাওয়া যায়।
ঘ) কম জায়গায় অধিক গাছ এবং তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়।

কাঁঠাল গাছে ক্লেফট জোড় কলম কেন করব ?
কাঁঠাল একটি জাতীয় ফল হওয়া সত্বেও আজও এর কোন স্বীকৃত জাত আবিষকৃত হয়নি। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা উন্নত এবং ভাল ফলদানে সক্ষম গাছ গুলো আজ অবহেলায় আর অযত্নে বিলুপ্ত প্রায়। তাছাড়া আমাদের দেশে একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রচুর কাঁঠাল পাওয়া যায় কিন্তু এর পারপরই কাঁঠালের প্রাপ্যতা কমে আসে। তাই জোড় কলমের মাধ্যমে আমরা স্বীকৃত জাত সংরক্ষণ, লুপ্ত প্রায় গাছ সমূহ রক্ষা, ফলের মৌসুম দীর্ঘায়িতকরণ এবং রপ্তানী গুণাগুণ সম্পন্ন কাঙ্ক্ষিত ফল উৎপাদন করতে পারি। ক্লেফট জোড় কলমের মাধ্যমে দেখা গেছে জোড়ের স্থান এমনভাবে জোড় লাগে যে, বাহির থেকে বোঝা যায় না।

কি ভাবে ক্লেফট জোড় কলম করব ?
উপযুক্ত সময় বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাস। কারণ এই সময় আর্দ্রতা এবং গাছের কোষের কার্যকারীতা বেশী থাকে।

স্টক তৈরীঃ
অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু পরিবেশ উপযোগী গাছের বীজ হতে চারা তৈরী করতে হবে যাতে কাঙ্ক্ষিত অংশ জোড়া লাগানো যায়।

এর জন্য অনুসৃত ধাপ সমূহঃ
ক) পরিণত গাছ হতে সুস্থ ও সবল বীজ সংগ্রহ করা।
খ) দোঁআশ মাটির সাথে অর্ধেক পরিমানে পঁচা গোবর ও ধানের তুষ মিশ্রিত করে ২০ সেঃ মিঃ ও ১২ সেঃ মিঃ আকারের পলিব্যাগ ভরতে হবে।
গ) প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ মাটির সামান্য নীচে (১ সেঃ মিঃ) সমান্তরাল ভাবে রোপন করতে হবে।
ঘ) বীজ লাগানোর ৭-১০ দিনের মধ্যে তা গজাবে। তবে ২-৩ সপ্তাহ বয়সের চারা কলমের জন্য উপযোগী।
ঙ) স্টক গাছটি সোজা ও সবল হতে হবে।

সায়ন নির্বাচনঃ
ক) উৎকৃষ্ট ও কাঙ্ক্ষিত গাছ হতে ১-২ মাস বয়সের ষ্টক এর সম ব্যাস সম্পন্ন ডাল হতে সায়ন সংগ্রহ করতে হবে।
খ) সায়ন অবশ্যই রোগ-বালাই মু্‌ক্ত হতে হবে।
গ) সায়নের শীর্ষকুঁড়ি কয়েকদিনের মধ্যে বিকশিত হবে এমনটি হতে হবে। এবং যা দেখতে গাঢ় সবুজ কিন্তু শক্ত এমন সায়ন নিতে হবে।
ঘ) জোড় কলম করার পূর্বে সায়নের সমন্ত পাতা ফেলে দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে কাটা অংশ পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।
ঙ) সায়নের দৈর্ঘ্য ৫-১০ সেঃ মিঃ হতে হবে।

ক্লেফট জোড় লাগানোর পদ্ধতিঃ
ক) প্রথম ষ্টক গাছের গোড়া পরিস্কার করে মাটি হতে ৫-১০ সেঃ মিঃ উপরে ধারালো ব্লেড দিয়ে মাথা সমানভাবে কেটে কান্ডের মাঝামাঝি অংশে ২-২.৫ সেঃ মিঃ লম্বা ভাবে চিরে দিতে হবে এবং সায়নের গোড়ার উভয় পাশে একই ভাবে ২-২.৫ সেঃ মিঃ কাটতে হবে।
খ) এবার ষ্টক এর কর্তিত অংশের সায়নের কর্তিত অংশ সমান করে প্রবেশ করাতে হবে।
গ) অতঃপর জোড় লাগানো জায়গা পলিথিন ফিতা দিয়ে শক্তভাবে বেঁধে দিতে হবে।
ঘ) এরপর কলমের শাখায় একটি পলিথিনের টুপি পরিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।

পরবর্তী পরিচর্যাঃ
ক) ঠিকমত মাটির রস সংরক্ষণ রাখতে হবে।
খ) কুঁড়ি গজানোর সাথে সাথে পলিথিণের টুপি খুলে দিতে হবে।
গ) স্টক থেকে বের হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত কুঁড়ি ভেঙ্গে দিতে হবে।
ঘ) গ্রাফটিং কৃত গাছ গুলো পরবর্তী বৎসর এ লাগানোর আগ পর্যন্ত পলিব্যাগ সহ মাটিতে পুতে রাখতে হবে।

উৎসঃ
প্রফেসর ডঃ এম. এ. রহিম
ফ্রুট ট্টি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

রিপ্লাই করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া এখানে আপনার নাম লিখুন