মসুর ডাল (Lentil)

0
212

পরিচিতি

বাংলা নাম : মসুর
ইংরেজী নাম : Lentil
বৈজ্ঞানিক নাম :
পরিবার : Leguminosaeবাংলাদেশে ডাল ফসলের এলাকা ও উৎপাদনের দিক থেকে মসুরের স্থান দ্বিতীয়। মোট আবাদী এলাকা প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টর এরং উৎপাদন প্রায় প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মে. টন।

মসুরের জাত

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট কর্তৃক এ পর্যন্ত মসুরের ৪ টি উন্নত জাত উদ্ভাবিত হয়েছে যেমন ঃ বারিমসুর-১, বারি মসুর-২, বারি মসুর-৩, বারি মসুর-৪।
বারি কর্তৃক উদ্ভাবিত এসব জাত কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক আবাদ হলে দেশে ডালের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা সম্ভব হবে। মসুর একদিকে মূল ফসল এবং অন্যদিকে আন্তঃফসল হিসেবে বাংলাদেশে চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী। মসুর চাষে জমির উর্বরতাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

বারি মসুর-১
বারি মসুর-১ জাত পাবনা এলাকার সংগৃহীত জার্মপ্লাজম থেকে উদ্ভাবন করা হয়। ১৯৯১ সালে কৃষক পর্যায়ে আবাদের জন্য এ জাতটি অনুমোদন লাভ করে। গাছের আকৃতি মধ্যম এবং উপরিভাগের ডগা বেশ সতেজ। গাছের পাতা গাঢ় সবুজ। কান্ড হালকা সবুজ। ফুলের রং সাদা। বারি মসুর-১ জাতটির বীজের আকার স্থানীয় জাতসমূহের চেয়ে একটু বড়। হাজার বীজের ওজন ১৫-১৬ গ্রাম। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ১০-১২ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৬-২৮%। এ জাতের জীবনকাল ১০৫-১১০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৭-১.৮ টন।

বারি মসুর-২
ইকার্ডা (ICARDA) থেকে ১৯৮৪ সালে এ লাইনটি বাংলাদেশে আনা হয়। পরবর্তীতে বহুস্থানিক পরীক্ষার পর ১৯৯৩ সালে সারা দেশে আবাদের জন্য জাতটি অনুমোদন লাভ করে। গাছের আকার মধ্যম। গাছের উপরিভাগ সামান্য লতানো হয়। পাতায় সরু আকর্ষী থাকে। গাছের পাতা গাঢ় সবুজ। কান্ড হালকা সবুজ ও ফুল সাদা। হাজার বীজের ওজন ১২-১৩ গ্রাম। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ১৪-১৬ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৭-২৯%। জাতটির জীবনকাল ১০৫-১১০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৫-১.৭ টন।

বারি মসুর-৩
বারি মসুর-৩ জাতটি একটি সংকর জাত। একটি স্থানীয় জাত এবং অগ্রবর্তী লাইনের (বিএলএক্স ৭৯৬৬৬) সাথে ১৯৮৫ সালে সংকরায়ণ করা হয়। পরবর্তীতে বহুস্থানিক ফলন পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাইকৃত এ জাতটি ১৯৯৬ সালে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন করা হয়। পাতার রং সবুজ। বীজের রং ধূসর এবং বীজে ছোট ছোট কালচে দাগ আছে। বীজের আকার স্থানীয় জাত অপেক্ষা বড়। হাজার বীজের ওজন ২২-২৫ গ্রাম। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ১০-১২ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৪-২৬%। জীবনকাল ১০৫-১১০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৫-১.৭ টন।বারি মসুর-৪
বারি মসুর-৪ জাতটি ১৯৮৫ সালে বারি মসুর-১ এরং ইকার্ডা থেকে প্রাপ্ত জাতের সাথে সংকরায়ণ করে ১৯৮৭ সালে উদ্ভাবন করা হয়। পরবর্তীতে এ লাইনটির (আইএলএক্স ৮৭২৪৭) ফলন সন্তোষজনক হওয়ায় উন্নত জাত হিসেবে চাষাবাদের জন্য ১৯৯৬ সালে অনুমোদন করা হয়। গাছের রং হালকা সবুজ। পত্রফলক আকারে বড় এবং পাতার শীর্ষে আকর্ষী আছে। ফুলের রং বেগুনি। বীজের আকার স্থানীয় জাত হতে বড় ও চেপ্টা ধরনের। বীজের রং লালচে বাদামি। হাজার বীজের ওজন ১৮-২০ গ্রাম। এ জাতটি মরিচা ও স্টেমফাইলিয়াম ব্লাইট রোগ প্রতিরোধী। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ১১-১৩ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৪-২৬%। জীবনকাল ১০৫-১১৫ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৬-১.৭ টন।

মসুর ডাল পাকা

মাটি ও জমি তৈরী

সুনিষ্কাশিত বেলে দোআঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য উপযোগী। জমি ৩-৪ টি আড়াঅড়ি চাষ ও মই দিয়ে তৈরী করতে হয়। জমি ভালভাবে ঝুরঝুরে করে নেওয়া উত্তম।

বীজের হার ও বপন পদ্ধতি

বীজের হার ৩০-৩৫ কেজি/হেক্টর। ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশী দিতে হয়। তবে বারি মসুর-৩ এর বেলায় হেক্টরপ্রতি ৩৫-৪০ কেজি বীজ ব্যবহার করতে হবে। ছিটিয়ে অথবা সারি করে বীজ বপন করা যায়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেমি রাখতে হবে। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে b‡f¤^i মাসের প্রথম সপ্তাহ) পর্যন্ত মসুর বীজ বপন করা যায়।

সারের পরিমাণ-প্রয়োগ পদ্ধতি

সারের নামসারের পরিমান/হেক্টর
ইউরিয়া৪০-৫০ কেজি
টিএসপি৮০-৯০ কেজি
এমপি৩০-৪০ কেজি
অণুজীব সারসুপারিশ মত
মসুর ডালে সারের পরিমান

সমুদয় সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে পূর্বে মসুর চাষ করা হয় নাই সেখানে প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুুমোদিত অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। ইনোকুলাম ব্যবহার করলে সাধারণত ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হয় না।

অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা

বপনের ৩০-৪০ দিনের মধ্যে নিড়ানি দ্বারা একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতিবৃষ্টির ফলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

রোগবালাই দমন

মসুরের গোড়া পচা রোগ দমন
এ রোগের জীবাণু স্কেলেরোসিয়াম রলফসি নামক এক প্রকার ছত্রাক। গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ক্রমান্বয়ে হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। মাটি ভিজা থাকলে গাছের গোড়ায় ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়াম ও সরিষার দানার ন্যায় স্কেলেরোসিয়াম গুটি দেখা যায়। এ জীবানু গাছের অবশিষ্টাংশ, বিকল্প পোষাক ও মাটিতে বেঁচে থাকে এবং পরবর্তী বছরে ফসল আক্রমণ করে। ভিজা স্যাঁতসেঁতে মাটি রোগ বিস্তারের সহায়ক। প্রতিকার
১। ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২। অধিক পরিমাণ পচা জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।
৩। ভিটাভেক্স-২০০ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম (০.২৫%) মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

মসুরের মরিচা রোগ দমন
ইউরোমাইসিস ভিসিয়া ফেবি নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়। আক্রান্ত গাছের পাতায় বিভিন্ন আকৃতির ছোট ছোট মরিচা রঙের গুটি দেখা যায়। পরবর্তীতে তা গাঢ় বাদামি ও কালো রং ধারণ করে। কান্ডেও এ রকম লক্ষণ দেখা যায়। আর্দ্র আবহাওয়ায় ও রোগের প্রকোপ বেশী হয়। প্রতিকার
১। ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২। রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন বারি মসুর-৩ ও বারি মসুর-৪ চাষ করতে হবে।
৩। টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) ১২-১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার সেপ্র করতে হবে।মসুরের স্টেমফাইলাম ব্লাইট রোগ দমন
স্টেমফাইলাম প্রজাতির ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত গাছের পাতায় সাদা ছত্রাকের জালিকা দেখা যায়। দূর থেকে অক্রান্ত ফসল আগুনে ঝলসানো মনে হয়। আক্রমণের শেষ পর্যায়ে গাছ কালচে বাদামি রং ধারণ করে । ভোর বেলায় পাতা এরং কান্ডে এক ধরণের সাদা ছত্রাক জালিকার উপস্থিতি দ্বারা সহজেই স্টেমফাইলাম ব্লাইট রোগ সনাক্ত করা যায়।বীজ, বিকল্প-পোষাক, বায়ু প্রভৃতির মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। প্রতিকার
১। ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২। আক্রমণ দেখা দেওয়ার মাত্র রোভরাল-৫০ ডব্লি পি নামক ছত্রাক নাশক (০.২%) ১০ দিন অন্তর অন্তর ২-৩ বার সেপ্র করতে হবে।

বীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি

বীজ ভালভাবে রোদে শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ আনুমানিক ১০% এর নিচে রাখতে হবে। তারপর টিনের পাত্র ও পলিথিনসহ চটের ব্যাগ অথবা আলকাতরার প্রলেপ দেওয়া মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।

সাথী ফসল হিসেবে চাষ

এ দেশে সাধারণত রোপা আমন ধান কর্তনের পরই রবি শস্যের আবাদ হয়ে থাকে। তবে ধান কাটার পর অনেক ক্ষেত্রেই জমিতে রস থাকে না। আবার কখনও কখনও জমিতে ‘জো’ আসে না। এ অবস্থায় সময়মত মসুর বপন করা যায় না। কিন্তু রোপা আমন ধানের জমিতে মসুর সাথী ফসল (রিলে ক্রপ) হিসেবে চাষ করলে সময় মত মসুর বপন করে ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব।

মসুর ডাল রান্নার জন্য

সাথী ফসল (রিলে ক্রপ)

রোপা আমন ফসলে ফুল আসার পর কিন্তু কর্তনের পূর্বে অন্য যে ফসলটি বপন করা হয় তাকে সাথী ফসল বলে। এ পদ্ধতিতে ধান কাটার ১০-১৫ দিন পূর্বে ধানের জমি থেকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই কাদার মধ্যে মসুরের বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। এ পদ্ধতিতে আবাদ করলে চাষ করে আবাদের চেয়ে ৪৫% খরচ কম হয়। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মসুরের উৎপাদন কৌশল নিম্নরুপ ঃ

বপনের সময়
অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ (কার্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত) মসুর বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।

জমি নির্বাচন ও বপন পদ্ধতি
এ পদ্ধতিতে মসুর আবাদের জন্য দোআঁশ মাটি বেশী উপযোগী। রোপা আমন/বোনা আমন ধানের যে সমস্ত জমি অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ‘জো’ আসে না অথবা ধান কাটা সম্ভব হয় না, এমন জমি নির্বাচন করে ধান কাটার পূর্বে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ধানের মধ্যে মসুরের বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। বীজ বপনের পূর্বে ৫-৬ ঘন্টা ভিজিয়ে বপন করলে ভাল হয়।

বীজের পরিমাণ
প্রতি হেক্টরে ৪০-৪৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।

সার প্রয়োগ
বীজ বপনের ৩/৪ দিন পূর্বে বীজ বপনের ২/৩ দিন পর হেক্টরপ্রতি ৯০ কেজি টিএসপি এবং ৩৫ কেজি এমপি সার একসাথে ছিটাতে হবে। কোন জমিতে প্রথমবার মসুর চাষ করলে মসুরের প্রতি কেজি বীজের সাথে ৫০ গ্রাম জীবানু সার ভাতের মাড়/চিটাগুড় মিশিয়ে বপন করতে হবে। তবে ইউরিয়া সার চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর প্রতি হেক্টরে ৪৫ কেজি উপরি প্রয়োগ করতে হয়। এক্ষেত্রে জমিতে রসের পরিমাণ কম থাকলে বিকেল বেলায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

আন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা
এ পদ্ধতিতে মসুরের জমিতে সাধারণত আগাছা দমন ও সেচের তেমন প্রয়োজন পড়ে না। তবে জমিতে সামান্য কিছু আগাছা থাকলে বপনের ৩০-৩৫ দিন পর হাত দ্বারা আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।

ফলন
এ পদ্ধতিতে মসুরের ফলন হেক্টরপ্রতি ১৪০০-১৫০০ কেজি হয়ে থাকে।ফসল সংগ্রহ, মাড়াই ও সংরক্ষণ
সাধারণত বীজ বপনের ১১৫-১২০ দিন পর মসুর সংগ্রহ করা হয়। মাঠে গাছ ফলসহ শুকিয়ে হলুদ হলে মাটির উপর থেকে গাছের গোড়াসহ কেটে এনে পরিষ্কার খোলায় ভালভাবে রোদে শুকিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে/গরু ঘুরিয়ে/ মেশিনের সাহায্য মাড়াই করে বীজ সংগ্রহ করা হয়। বীজ সংগ্রহের পর ভালভাবে পরিষ্কার করে ২-৩ দিন ভালভাবে রৌদে শুকিয়ে বায়ু নিরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে।

শুষ্ক জমিতে মসুর চাষ

শুষ্ক ভূমি অঞ্চলে জমিতে প্রয়োজনীয় রসের অভাব একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা। আমাদের দেশে সাধারণত রোপা আমন ধান কাটার পরই রবি শস্যের আবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ধান কাটার পর জমিতে পরিমিত রস থাকে না। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে উঁচু জমিতে বপনের সময়ের পূর্বেই জমির রস শুকিয়ে যায়। তবে এ ধরণের জমিতে বীজ প্রাইমিং (বীজ ভিজানো) করে বপন করলে স্বাভাবিক পদ্ধতির চেয়ে ৩-৪ দিন আগে বীজ গজায় এবং গাছের পরবর্তী বৃদ্ধিও ভাল হয়, যা উচ্চ ফলনের সহায়ক। প্রাইম পদ্ধতিতে মসুরের চাষ নিম্নরুপ

জাত
বারি মসুর-৩ এবং বারি মসুর-৪

বপনের সময়
অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ (কার্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত) বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।

জমি নির্বাচন
সুনিষ্কাশিত দোআঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য বেশী ভাল।

বীজের পরমাণ
জমিতে পরিমিত পরিমাণ গাছের জন্য প্রতি হেক্টরে ৩০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়।

বীজ প্রাইমিং পদ্ধতি
রাত্রে প্রয়োজনীয় বীজ বালতি/গামলা অথবা অনুরুপ পাত্রে ৮-১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরের দিন সকালে পাত্র থেকে বীজগুলি উঠিয়ে ছায়াতে রোখে শুধু মাত্র বীজের গায়ের পানি শুকিয়ে ঐ দিনই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বীজ বপন করতে হবে।

সার প্রয়োগ
জমি তৈরীর শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি ৪৫ কিজি ইউরিয়া, ৯০ কেজি টিএসপি এবং ৩৫ কেজি এমপি সার একসাথে ছিটাতে হবে। কোন জমিতে প্রথমবার মসুর চাষ করলে মসুরের প্রতি কেজি বীজের সাথে ৫০ গ্রাম জীবানুসার, ভাতের মাড়/চিটাগুড় মিশিয়ে বপন করতে হবে।

জমি চাষ ও বপন পদ্ধতি
মাটির প্রকার ভেদে ৩-৪ টি চাষ ও উত্তমরুপে মই দিয়ে জমি তৈরী করতে হয়। জমি তৈরীর শেষ চাষের পর পরিমাণ মত বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। তরপর একটি চাষ ও আড়াআড়িভাবে দুটি মই দিতে হবে। এতে করে জমির রস ধারণ ক্ষমতা বাড়ে এবং বীজ গজাতে সাহায্য কবে। এছাড়া ২৫ সেমি দূরে দূরে সারি করেও বীজ বপন করা যায়। তবে জমিতে রস কম থাকলে বীজ ছিটিয়ে বপন করাই উত্তম।আন্তঃপরিচর্যা
সাধারণত মসুর বৃষ্টি নির্ভর ফসল হিসেবে চাষ করা হয়ে থাকে। তবে মাটিতে যদি রসের অভাব হয় এবং রসের অভাবে গাছের বৃদ্ধি কম হয় সেক্ষেত্রে চারা গজানোর ২৫-৩০ দিন পর একবার হালকা সেচ দিতে হয়। সেচ দেওয়ার পর জমি নিড়ানী দিয়ে মাটি আলগা করে দিতে হবে। জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। কারণ মসুর জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। আগাছার প্রকোপ বেশি হলে বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পর এক বার নিড়ানী দিতে হবে।

ফসল সংগ্রহ

মধ্য-ফাল্গুন থেকে মধ্য-চৈত্র (মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

রিপ্লাই করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন
দয়া এখানে আপনার নাম লিখুন